Child Labour Platform

বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ)

বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৬ কোটি শিশু শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে।

শিশু শ্রম কী?

শিশু শ্রম একটি বৈশ্বিক সমস্যা যা শিশুদের সম্ভাবনা পূরণে বাধা সৃষ্টি করে। এটি শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের শামিল—এ ধরনের কাজ তাদের মানসিক বা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ফেলতে পারে অথবা তাদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়।

তবে, প্রতিটি শিশুর দ্বারা সম্পাদিত কাজকে শিশু শ্রম বলা হয় না। যদি কোনো শিশু তার জীবন দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও শিক্ষাকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে কাজ করে, তাহলে সেটি শিশু শ্রমের আওতায় পড়ে না। অনেক সময় বড় শিশুরা তাদের অভিভাবকদের সাহায্য করতে গৃহস্থালির কাজ করে অথবা পকেট খরচের জন্য বা অভিজ্ঞতা অর্জনের উদ্দেশ্যে ছোটখাটো কাজ করে—এই কাজগুলো ভবিষ্যতের কর্মজীবনের প্রস্তুতির অংশ।

শিশু শ্রম” বলতে সেইসব কাজকে বোঝায়, যা শিশুদের শৈশব, সম্ভাবনা ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে এবং যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

শিশু শ্রম এমন কাজকে নির্দেশ করে যা—

  • মানসিক, শারীরিক, সামাজিক বা নৈতিকভাবে শিশুদের জন্য ক্ষতিকর; এবং/অথবা

  • শিক্ষার সাথে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে, যেমন: বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা, মাঝপথে বিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য করা অথবা দীর্ঘ সময় ও কঠিন পরিশ্রমের কাজের সাথে বিদ্যালয়ের উপস্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা করতে বাধ্য করা।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সংজ্ঞা ও মানদণ্ড শিশু শ্রম শ্রেণিবিন্যাস ও নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তাদের মৌলিক দুটি সনদ, বিশেষ করে সনদ নম্বর ১৩৮ এবং সনদ নম্বর ১৮২, ক্ষতিকর শিশু শ্রম মোকাবেলা ও নির্মূলের জন্য একটি নীতিমালা প্রদান করে।

গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সনদসমূহ:

সর্বনিম্ন বয়স সম্পর্কিত কনভেনশন (সংখ্যা ১৩৮)
এই কনভেনশন শিশুর চাকরিতে প্রবেশের জন্য একটি সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করে, যাতে শিশুরা এমন কোনো কাজের মধ্যে না পড়ে যা তাদের স্বাস্থ্য বা শিক্ষার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

শিশু শ্রমের নিকৃষ্টতম রূপ সম্পর্কিত কনভেনশন (সংখ্যা ১৮২)
এই কনভেনশন শিশু শ্রমের ভয়াবহ রূপগুলো—যেমন: বাধ্যতামূলক শ্রম, পাচার, বা শিশুদের স্বাস্থ্য ও বিকাশের জন্য ক্ষতিকর কাজ—নির্মূল করার উপর গুরুত্ব দেয়।

২০২০ সালে কনভেনশন ১৮২-এর সার্বজনীন অনুমোদন বিশ্বব্যাপী শিশুদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। শিশু শ্রমের মূল কারণ—দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, এবং দুর্বল আইনগত সুরক্ষা—সমাধানে বহুমুখী প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সকল শিশুর জন্য তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশের পথ নিশ্চিত করতে চলমান সচেতনতা কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

History of Child Labour

শিশু শ্রমের ইতিহাস

ইতিহাসে দেখা যায়, শিশুরা প্রায়ই কৃষিকাজ ও হস্তশিল্পের মাধ্যমে পরিবারিক অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করত। তবে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৮শ ও ১৯শ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের সময় যখন শিল্পকারখানা ও কৃষিক্ষেত্রে যান্ত্রিকীকরণ শুরু হয়, তখন বহু শিশু ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কারখানা ও কৃষিক্ষেত্রে শ্রম দিতে বাধ্য হয়।

ভিক্টোরিয়ান যুগে, শিশু শ্রম ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী রূপ নেয়। চার বছর বয়সী শিশুরাও কারখানায় কাজ করত। কয়লা খনির সংকীর্ণ সুড়ঙ্গ দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হতো, যা প্রাপ্তবয়স্কদের পক্ষে সম্ভব ছিল না—এতে তাদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ত। তারা প্রতি সপ্তাহে ৫২ থেকে ৮০ ঘণ্টা কাজ করত, অথচ মজুরি পেত মাত্র একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ১০-২০ শতাংশ। অনেক শিশুকে যৌন পেশাতেও বাধ্য করা হতো।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে শিশুশ্রম নিয়ন্ত্রণ এবং শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন শুরু হয়। সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়:

 

সময়কাল অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপসমূহ:

১৯৩৮ – যুক্তরাষ্ট্রের ফেয়ার লেবার স্ট্যান্ডার্ড অ্যাক্ট (Fair Labour Standards Act) প্রণয়ন হয়, যা ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কাজের সময় ও প্রকার নির্ধারণ করে।

 ১৯৭৩ – ন্যূনতম বয়স সংক্রান্ত কনভেনশন (Minimum Age Convention) গৃহীত হয়, যা শিশুর জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করে। ১৭২টি দেশ এই কনভেনশন অনুমোদন করে, যদিও কিছু ব্যতিক্রম রাখা হয়।

 ১৯৮৯ – জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ (Convention on the Rights of the Child) গৃহীত হয়, যা শিশুর বিকাশ ও নিরাপদ জীবনের অধিকার নিশ্চিত করে।

১৯৯২ – আন্তর্জাতিক শিশু শ্রম নির্মূল কর্মসূচি (IPEC) চালু হয়, যার লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী শিশু শ্রম নির্মূল ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে সহায়তা প্রদান।

 ১৯৯৯ – শিশু শ্রমের নিকৃষ্টতম রূপ নির্মূল কনভেনশন (Worst Forms of Child Labour Convention) গৃহীত হয়, যা দাসত্ব, পাচার, ঋণ দাসত্ব, সশস্ত্র সংঘাতে জোরপূর্বক নিয়োগ, যৌন শোষণ, মাদক চোরাচালান ইত্যাদি শিশুদের উপর চালানো নিষিদ্ধ করে। এটি ১৮৬টি দেশ অনুমোদন করে।

 ২০২১ – জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০২১ সালকে শিশু শ্রম নির্মূল বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে।

 ২০২৫ – জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৮.৭ (SDG 8.7) অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশু শ্রমের সব রূপ নির্মূল করার আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার গৃহীত হয়।

বৈশ্বিক পরিসংখ্যান

  •  বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ১৬ কোটি (160 মিলিয়ন) শিশু শিশু শ্রমে নিয়োজিত।
  •  এর মধ্যে ৭.৯ কোটি (79 মিলিয়ন) শিশু ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিকর শ্রমে নিয়োজিত।
  •  শিশু শ্রমের ৭০% ঘটে কৃষিখাতে, এরপর ২০% সেবাখাতে এবং ১০% শিল্পখাতে।

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান

  • বাংলাদেশে ৩৪.৫ লাখ (3.45 মিলিয়ন) শিশু (৫-১৭ বছর বয়সী) শিশু শ্রমে নিয়োজিত।
  •  এর মধ্যে ১২.৮ লাখ (1.28 মিলিয়ন) শিশু ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে অংশগ্রহণ করছে।
  • বাংলাদেশের কৃষি খাতেই সবচেয়ে বেশি শিশু শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।

শিশু শ্রমের নিকৃষ্টতম রূপসমূহ

শিশু শ্রমের নিকৃষ্টতম রূপগুলোর মধ্যে রয়েছে এমন কাজ যেখানে শিশুরা দাসত্বে আবদ্ধ, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ ও রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনায় থাকে এবং অনেক সময় তারা বড় শহরের রাস্তায় একাকী জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়—এমনকি খুব কম বয়সেই।

যদিও শিশু শ্রমের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, তবে ILO Convention No. 182-এর ৩ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সবচেয়ে ক্ষতিকর রূপগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অবিলম্বে নির্মূল করা জরুরি

  • দাসত্বের সকল রূপ বা দাসত্বের সদৃশ প্রথা, যেমন শিশুদের বিক্রয় ও পাচার, ঋণ বন্ধক ও দাসত্ব, এবং জোরপূর্বক বা বাধ্যতামূলক শ্রম, যার মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে শিশুদের জোরপূর্বক বা বাধ্যতামূলক নিয়োগও অন্তর্ভুক্ত;
  • শিশুকে যৌন বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ব্যবহার, সংগ্রহ বা প্রস্তাব করা, পর্নোগ্রাফি প্রস্তুতকরণ অথবা পর্নোগ্রাফিক প্রদর্শনীর জন্য ব্যবহার করা।
  • শিশুকে অবৈধ কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার, সংগ্রহ বা প্রস্তাব করা, বিশেষ করে প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে নির্ধারিত মাদকদ্রব্য উৎপাদন ও পাচারের কাজে ব্যবহার করা
  • এমন কর্মসংস্থান, যা তার প্রকৃতি বা সম্পাদনের পরিবেশগত পরিস্থিতির কারণে শিশুর স্বাস্থ্যের, নিরাপত্তার বা নৈতিকতার জন্য ক্ষতিকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম

ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম হলো সেইসব কাজ, যা স্বভাবগতভাবে বা কাজের পরিবেশ অনুযায়ী শিশুদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা নৈতিকতার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO)-এর সুপারিশ নং ১৯০-এর ৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সরকারগুলোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ কাজ চিহ্নিত করা হয়েছে, যা শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া উচিত:

  • শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।
  • ভূগর্ভে, পানির নিচে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ উচ্চতায় বা সংকীর্ণ স্থানে কাজ।
  • বিপজ্জনক যন্ত্রপাতি, যন্ত্র বা হাতিয়ার ব্যবহারে কাজ, অথবা ভারী বোঝা হাতে বহন বা পরিবহনে সম্পৃক্ত কাজ।
  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ, যা শিশুকে ক্ষতিকর পদার্থ, উপাদান বা প্রক্রিয়ার সংস্পর্শে আনার অথবা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাপমাত্রা, শব্দের মাত্রা বা কম্পনের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে;
  • বিশেষত কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ, যেমন দীর্ঘ সময় বা রাতে কাজ, অথবা এমন কাজ যেখানে শিশুকে নিয়োগকর্তার পরিসর বা সংশ্লিষ্ট স্থানে অযৌক্তিকভাবে আটকে রাখা হয়।

বিশেষ প্রতিনিধি শিশু শ্রম নির্মূলে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে উদ্দীপ্ত ও সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

“শিশু শ্রম ও দারিদ্র্য পরস্পরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। যদি আপনি দারিদ্র্য নামক সামাজিক সমস্যার প্রতিকার হিসেবে শিশুদের শ্রমকে ব্যবহার করতে থাকেন, তবে চিরকাল আপনাকে দারিদ্র্য ও শিশু শ্রম—এই দুটি সমস্যাই বহন করতে হবে।”

আন্তর্জাতিক শ্রম মান

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় ১৯১৯ সালে একটি প্রধান লক্ষ্য ছিল শিশু শ্রমের বিলুপ্তি। ঐতিহাসিকভাবে, শিশু শ্রমের কার্যকর বিলুপ্তির লক্ষ্য সাধনে ILO-এর প্রধান হাতিয়ার ছিল শ্রম মানদণ্ড গ্রহণ ও তদারকি করা, যা কর্মসংস্থান বা কাজের জন্য ন্যূনতম বয়স ধারণার প্রতিফলন। তদুপরি, ১৯১৯ সাল থেকে এই নীতিটি যে ন্যূনতম বয়সের মানদণ্ড শিক্ষা গ্রহণের সাথে সম্পর্কিত হওয়া উচিত, এটি ILO-এর ঐতিহ্য হিসাবে এই এলাকায় মান নির্ধারণে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সনদ নম্বর ১৩৮ অনুযায়ী, কর্মসংস্থানে প্রবেশের জন্য ন্যূনতম বয়স অবশ্যই বাধ্যতামূলক শিক্ষা শেষ করার বয়সের চেয়ে কম হবে না।

১৯৯৯ সালে ILO কর্তৃক সনদ নম্বর ১৮২ গ্রহণ শিশু শ্রম বিলুপ্তির বিষয়ে বৈশ্বিক সম্মতিকে আরো দৃঢ় করেছে। এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ফোকাস প্রদান করেছে, তবে সনদ নম্বর ১৩৮-এ প্রদত্ত শিশু শ্রমের কার্যকর বিলুপ্তির প্রধান লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। তদুপরি, “সবচেয়ে খারাপ রূপ” ধারণাটি অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে সহায়ক এবং এটি মূলধারার শিশু শ্রম সমস্যার মোকাবেলায় একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ধারণাটি শিশুদের উপর কাজের প্রভাব এবং তাদের দ্বারা সম্পাদিত কাজের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করতেও সহায়ক।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, শিশু শ্রম তিনটি প্রধান ক্যাটেগরিতে বিভক্ত:

  • শিশু শ্রমের এমন অপরিবর্তনীয় সবচেয়ে খারাপ রূপ, যা আন্তর্জাতিকভাবে দাসত্ব, পাচার, ঋণবন্ধকতা ও অন্যান্য জোরপূর্বক শ্রম, সশস্ত্র সংঘাতে ব্যবহার করার জন্য শিশুদের জোরপূর্বক নিয়োগ, দেহব্যবসা ও পর্নোগ্রাফি, এবং অবৈধ কার্যকলাপ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়
  • এমন কাজ যা একটি শিশু তার নির্ধারিত ন্যূনতম বয়সের কমে সম্পাদন করছে (যে বয়সটি জাতীয় আইন অনুযায়ী, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নির্ধারিত), এবং যা শিশুর শিক্ষা ও পূর্ণ বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • এমন শ্রম যা একটি শিশুর শারীরিক, মানসিক বা নৈতিক সুস্থতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, তা তার প্রকৃতি বা এর বাস্তবায়নের পরিস্থিতির কারণে হতে পারে, যা ‘ঝুঁকিপূর্ণ কাজ’ হিসেবে পরিচিত।

জাতীয় শ্রম মান

বাংলাদেশ সরকার শিশু শ্রম নির্মূলের জন্য একাধিক মান ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, যা শিশুদের অধিকার সুরক্ষা এবং তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। কিছু মূল উপাদান:

  1. জাতীয় শিশু শ্রম নির্মূল নীতি (NCLEP) ২০১০:
    এই নীতি বাংলাদেশে শিশু শ্রম নির্মূলের জন্য একটি ব্যাপক কাঠামো হিসেবে কাজ করে। এটি শিশুদের অধিকার সুরক্ষা, শিক্ষা লাভের সুযোগ এবং পরিবারগুলোর জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার প্রদানের উপর গুরুত্ব দেয়।
  2. আইন:
    বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬:
    এই আইনটি ১৪ বছরের নিচে বয়সী শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ নিষিদ্ধ করে এবং কিশোর শ্রমিকদের (১৪-১৮ বছর বয়সী) জন্য নিয়মাবলী প্রদান করে।
    • The Child Act, 2013: This act defines child rights and protections, aligning with international conventions on children’s rights, and prohibits all forms of child labor.
    • শিশু আইন, ২০১৩: এই আইনটি শিশুদের অধিকার এবং সুরক্ষা সংজ্ঞায়িত করে, যা আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, এবং সমস্ত প্রকারের শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করে।
  3. আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি:
    বাংলাদেশ শিশু অধিকার সনদ (CRC) এবং ILO সনদ (নম্বর ১৩৮, ন্যূনতম বয়স এবং নম্বর ১৮২, শিশু শ্রমের সবচেয়ে খারাপ রূপ) এর স্বাক্ষরকারী দেশ, যা শিশু সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।

শিশুশ্রমের প্রাদুর্ভাব

শিশুশ্রমের প্রাদুর্ভাব ভিন্ন মহাদেশে অর্থনৈতিক অবস্থা, সাংস্কৃতিক প্রথা এবং সরকারী নীতির পার্থক্যের কারণে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। এখানে মহাদেশ অনুযায়ী শিশুশ্রমের প্রাদুর্ভাবের একটি সাধারণ সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হল:

আফ্রিকা

আফ্রিকা শিশুশ্রমের সবচেয়ে উচ্চ হার রয়েছে, যেখানে লাখ লাখ শিশু কাজের সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে কৃষি, খনন এবং গৃহস্থালি পরিষেবায়। অনুমান করা হয় যে, কিছু দেশে ২০% এরও বেশি শিশু শিশুশ্রমে জড়িত।

এশিয়া

এশিয়াতেও অনেক শিশু শ্রমের শিকার, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় (যেমন ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ)। এই অঞ্চলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, কিছু অঞ্চলে ১০% এরও বেশি শিশু শ্রমের শিকার।

ল্যাটিন আমেরিকা

ল্যাটিন আমেরিকায়, আফ্রিকা এবং এশিয়ার তুলনায় শিশুশ্রমের হার কম, তবে কিছু এলাকায় ৫%-১০% এর মধ্যে অনুমান করা হয়েছে। শিশুশ্রমের প্রাদুর্ভাব সাধারণত দারিদ্র্য এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের সাথে সম্পর্কিত।

ইউরোপ

ইউরোপে শিশুশ্রমের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলকভাবে কম, মূলত শক্তিশালী আইন এবং শিশুদের অধিকার রক্ষায় কঠোর নিয়মের কারণে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হার ৫% এর নিচে থাকে, তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন কৃষি শ্রম বা অভিবাসী সম্প্রদায়ে সমস্যাগুলি হতে পারে।

উত্তর আমেরিকা

উত্তর আমেরিকায় শিশুশ্রম অত্যন্ত বিরল, শক্তিশালী শ্রম আইন এবং শিশু সুরক্ষা নীতির কারণে। কৃষি বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজের ক্ষেত্রে কিছু ঘটনা ঘটতে পারে, তবে সামগ্রিক প্রাদুর্ভাব ১%-এর নিচে থাকে।

ওশেনিয়া

অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে শিশুশ্রম অত্যন্ত বিরল, তবে কিছু উন্নয়নশীল দ্বীপদেশে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে কিছু অঞ্চলে উচ্চ হার থাকতে পারে।

বিশ্বে শিশু শ্রমের প্রবণতা কোথায় বৃদ্ধি পাচ্ছে?

বিশ্বব্যাপী শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে অগ্রগতি সম্প্রতি স্থবির হয়ে পড়েছে: ২০১৬ সালের পর শিশু শ্রমে নিযুক্ত শিশুর অনুপাত প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। তদুপরি, বিপজ্জনক কাজে নিযুক্ত শিশুর শতাংশও অপরিবর্তিত রয়েছে।

তবে বৈশ্বিক অনুমান বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ব্যাপক তারতম্য আড়াল করে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে শতাংশ ও মোট সংখ্যার দিক থেকে শিশুশ্রমের প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। বিপরীতে, উপ-সাহারা আফ্রিকায় শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুদের সংখ্যা ও অনুপাত উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। উপ-সাহারা আফ্রিকায় প্রায় ৮৭ মিলিয়ন শিশু কোনো না কোনো ধরনের শিশুশ্রমে জড়িত, যা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সম্মিলিত সংখ্যার তুলনায় বেশি।

ছেলে ও মেয়েরা কি ভিন্ন ভিন্ন শিশু শ্রমে নিযুক্ত হয়?

বিশ্বব্যাপী, শিশু শ্রমে নিযুক্ত হওয়া ছেলেদের সংখ্যা মেয়েদের তুলনায় সব বয়সের গ্রুপে বেশি: 

 

  • ছেলেরা নির্মাণ, খনি এবং কারখানায় কাজ করতে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। 

  • মেয়েরা শিশু শ্রমে নিযুক্ত হলে সাধারণত সেবা খাতে, বিশেষ করে গৃহস্থালী কাজকর্মে থাকে।

সর্বশেষ তথ্য (২০২০ সালের শুরুর দিকে) অনুযায়ী

  • বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬৩ মিলিয়ন মেয়ে এবং ৯৭ মিলিয়ন ছেলে শিশু শ্রমে নিযুক্ত। 
  • বয়স বাড়ানোর সাথে সাথে লিঙ্গের পার্থক্য বাড়ে: ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে ছেলেরা প্রায় দ্বিগুণ মেয়েদের তুলনায় শিশু শ্রমে নিযুক্ত। 

উল্লেখযোগ্য যে, শিশুশ্রমের সংজ্ঞার মধ্যে শিশুদের নিজ নিজ বাসায় গৃহস্থালি কাজ অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে যখন প্রতি সপ্তাহে ২১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় গৃহস্থালি কাজকেও শিশুশ্রমের আওতায় ধরা হয়, তখন লিঙ্গভিত্তিক ব্যবধান প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।

শিশুশ্রমের সবচেয়ে সাধারণ রূপগুলো কী কী?

  • কৃষি: প্রায় ৭০% শিশু শিশু শ্রমে নিযুক্ত থাকে কৃষি বা কৃষিজ কাজের মধ্যে, যেখানে অনেক শিশুর বয়স খুব কম। 
  • পরিবারভিত্তিক শ্রম: প্রায় ৭২% শিশুশ্রম পরিবারভিত্তিক পরিবেশে সংঘটিত হয়, প্রধানত পারিবারিক খামার বা ছোট পারিবারিক উদ্যোক্তায়। যদিও পরিবারভিত্তিক পরিবেশকে প্রায়ই তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা হয়, বাস্তবে এটি শিশুদের স্বাস্থ্যের, নিরাপত্তার এবং নৈতিক বিকাশের জন্য প্রায়ই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে।

শিশুশ্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সর্বাধিক ঝুঁকিগুলো কী কী?

শিশুশ্রম, যেখানেই এবং যেভাবেই ঘটুক না কেন, শিশুদের মৌলিক অধিকার সীমিত করে। অনেক শিশু, যারা শ্রমে নিযুক্ত হয়, তারা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে – যা প্রায়ই তাদের বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঘটে। ঝুঁকির কয়েকটি উদাহরণ হলো:”

  • কৃষি: বিপজ্জনক রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি এবং চরম আবহাওয়ার শিকার হওয়া।
  • খনি: ভূগর্ভস্থ শ্যাফট, ভারী মাল পরিবহন, এবং খনিজ বিচ্ছিন্ন করতে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার।
  • মাছ ধরার কাজ: দীর্ঘ সময় সমুদ্রে থাকা, কঠোর আবহাওয়ার মধ্যে কাজ করা, পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা।
  • রাস্তার কাজ: যানবাহনের সাথে সংঘর্ষ, বিষাক্ত গ্যাস এবং অবৈধ কার্যক্রমের ঝুঁকি।

 

এছাড়াও, শিশু শ্রমের কিছু নির্জন প্রকৃতি তাদেরকে শোষণ এবং পাচারের ঝুঁকিতে আরও বেশি ফেলতে পারে।

বিশ্ব কি শিশু শ্রম নির্মূলের পথে আছে?

বিশ্ব এখনও শিশু শ্রম নির্মূলের পথে নেই। দ্রুত কর্মসূচি গ্রহণ না হলে, ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক ১২৫ মিলিয়ন শিশু এখনও শিশু শ্রমে নিযুক্ত থাকবে – এটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDGs) এর বৈশ্বিক ডেডলাইন।

এছাড়াও, শিশুশ্রমের কিছু নির্জন প্রকৃতির কাজ শিশুদের নির্যাতন ও পাচারের আরও বড় ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে লড়াই

ILO অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫২ মিলিয়ন শিশু শিশু শ্রমে নিযুক্ত ছিল। UNHCR-এর মতো সংস্থাগুলোর সহায়তা সত্ত্বেও, অনেক শিশু এখনও তাদের পরিবারের সহায়তার জন্য কাজ করছে। মাদাগাস্কারে, ILO একটি কর্মসূচি চালু করেছে যা শিশু শ্রমে নিযুক্ত শ্রমিকদের প্রশিক্ষণে প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য এবং তাদের জীবন পরিবর্তন করার জন্য সহায়তা প্রদান করছে।

বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশে শিশুশ্রমের কারণসমূহ

শিশুশ্রম একটি জটিল সমস্যা, যা বৈশ্বিকভাবে এবং বাংলাদেশে বিভিন্ন কারণে প্রভাবিত হয়। এখানে কিছু মূল কারণ তুলে ধরা হলো:

বিশ্বব্যাপী শিশুশ্রমের কারণসমূহ

  • দারিদ্র্য: নিম্ন আয়ের পরিবারগুলি তাদের জীবিকা অর্জনের জন্য প্রায়ই তাদের শিশুর উপার্জনের উপর নির্ভরশীল থাকে।
  • শিক্ষার অভাব: গুণগত শিক্ষায় সীমিত প্রবেশাধিকার শিশুদের স্কুলে উপস্থিতির পরিবর্তে কাজ করতে বাধ্য করে।
    সাংস্কৃতিক রীতিনীতি: কিছু সম্প্রদায়ে, কাজকে জীবনের এক ধরনের পদবিন্যাস বা পারিবারিক সহায়তা দেওয়ার উপায় হিসেবে দেখা হয়।
  • অর্থনৈতিক শোষণ: নিয়োগকর্তারা শিশুদের নিয়োগ করতে পছন্দ করতে পারেন কারণ তারা তাদের প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে কম মজুরি দেয়
  • সংঘাত ও বাস্তুচ্যুতি: যুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিবারগুলোকে জীবিকা অর্জনের জন্য শিশুশ্রমে নির্ভর করতে বাধ্য করতে পারে।
  • দুর্বল আইনি সুরক্ষা: শ্রম আইন প্রয়োগে দুর্বল দেশগুলোতে শিশুশ্রমের হার বেশি দেখা যেতে পারে।

স্থানীয় শিশুশ্রমের কারণসমূহ

  1. দারিদ্র্য: বাংলাদেশে ২০% এরও বেশি জনসংখ্যা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, ফলে শিশুশ্রম অনেক পরিবারে উপার্জনের একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়ায়।
  2. শিক্ষার বাধা: যদিও প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করা হয়, তবুও অনেক শিশু শিক্ষা পায় না কারণ খরচ, দূরত্ব বা বিদ্যালয়ের মানের অভাব।
  3. শ্রমের চাহিদা: তৈরি পোশাক এবং কৃষি খাতের মতো শিল্পগুলো শিশুদের কাজে নিয়োগ করে, কারণ তাদেরকে কম মজুরি দিতে হয় এবং তারা কর্মস্থলে ভালো শর্তের দাবি করে না।
  4. পরিবারের চাপ: অনেক ক্ষেত্রে, বড় পরিবারগুলির একাধিক আয় প্রয়োজন, ফলে শিশুরা দ্রুত শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়
  5. আইন প্রয়োগের অভাব: শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার জন্য আইন থাকলেও, তার কার্যকর প্রয়োগে দুর্বলতা থাকায় শিশুশ্রম অব্যাহত থাকে।
  6. সাংস্কৃতিক গ্রহণযোগ্যতা: কিছু অঞ্চলে শিশুশ্রম সাংস্কৃতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, এবং সম্প্রদায়গুলো এটিকে প্রয়োজনীয় বা উপকারী হিসেবে দেখে।

বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (BLF) শিশুশ্রম নির্মূলে কি কাজ করছে?

বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (BLF) শিশুশ্রম মোকাবেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যা বাংলাদেশে একটি নিরাপদ, সমানাধিকারের এবং শিশুশ্রমমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। শিশুশ্রম নির্মূল করতে আমরা বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে এবং খাতে সেক্টরভিত্তিক এবং এলাকার ভিত্তিতে দুটি পন্থা গ্রহণ করি।

সচেতনতামূলক প্রচারণা

সচেতনতামূলক প্রচারণা

  • কমিউনিটি এনগেজমেন্ট: বিএলএফ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে  সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করে, যা পরিবারের সদস্যদের শিশুশ্রমের শিশুদের স্বাস্থ্যের, শিক্ষার এবং সামগ্রিক সুস্থতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষা দেয়।
  • ওয়ার্কশপ এবং সেমিনার: শ্রমিক, নিয়োগকর্তা এবং নীতিনির্ধারকদের জন্য শিশুশ্রম নির্মূলের গুরুত্ব এবং শ্রম আইন মেনে চলার বিষয়ে জানাতে বিভিন্ন কর্মশালা এবং সেমিনার আয়োজন করে।

উদ্ধার এবং পুনর্বাসন

  • শিশু-বান্ধব স্থান: বিএলএফ উদ্ধারকৃত শিশুশ্রমিকদের সহায়তা করার জন্য আশ্রয়স্থল এবং শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করে, যেখানে তাদের সুস্থ হওয়া এবং বেড়ে ওঠার জন্য নিরাপদ পরিবেশ প্রদান করা হয়
  • শিক্ষা কর্মসূচি: বিএলএফ শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বা পেশাদারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে পুনঃস্থাপন করতে সহায়তা করে, যাতে তারা ভবিষ্যতের জন্য আরও ভালো সুযোগ পায়।

গবেষণা এবং মনিটরিং

  • তথ্য সংগ্রহ: বিএলএফ শিশুশ্রমের পরিমাণ বোঝার জন্য গবেষণা পরিচালনা করে এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পগুলো চিহ্নিত করে, যেমন গার্মেন্টস উৎপাদন, কৃষি এবং গৃহস্থালি কাজ।

মনিটরিং ব্যবস্থা: বিএলএফ কর্মস্থল মনিটর করার জন্য ব্যবস্থা তৈরি করতে সহায়তা করে এবং নিশ্চিত করে যে শিশুশ্রম আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে।

পার্টনারশিপ

  • স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: বিএলএফ স্থানীয় এনজিও, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে সহযোগিতা করে শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে তাদের প্রচেষ্টা শক্তিশালী করতে
  • পরিবারের সহায়তা: এটি পরিবারগুলিকে অর্থনৈতিক সহায়তা বা বিকল্প আয়-উত্পাদন প্রশিক্ষণ প্রদান করে, যাতে শিশুশ্রমের ওপর তাদের নির্ভরশীলতা কমানো যায়।

আইনগত সহায়তা এবং নীতিনির্ধারণে প্রভাব:

  • আইন সমর্থন: বিএলএফ বাংলাদেশ শ্রম আইন এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশনগুলো যেমন আইএলও কনভেনশন ১৮২ (শিশুশ্রমের সবচেয়ে খারাপ রূপ) এবং ১৩৮ (কর্মসংস্থানের জন্য সর্বনিম্ন বয়স) এর কঠোর প্রয়োগের পক্ষে অ্যাডভোকেসি করে
  • সরকারি সহযোগিতা: এটি সরকারী সংস্থাগুলির সাথে কাজ করে, জাতীয় নীতি শক্তিশালী করতে এবং শিশুশ্রম নির্মূলের জন্য কার্যকরী কাঠামো তৈরি করতে।

উদ্ধার এবং পুনর্বাসন

  • শিশু-বান্ধব স্থান: বিএলএফ উদ্ধারকৃত শিশুশ্রমিকদের সহায়তা করার জন্য আশ্রয়স্থল এবং শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করে, যেখানে তাদের সুস্থ হওয়া এবং বেড়ে ওঠার জন্য নিরাপদ পরিবেশ প্রদান করা হয়
  • শিক্ষা কর্মসূচি: বিএলএফ শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বা পেশাদারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে পুনঃস্থাপন করতে সহায়তা করে, যাতে তারা ভবিষ্যতের জন্য আরও ভালো সুযোগ পায়।

গবেষণা এবং মনিটরিং

  • তথ্য সংগ্রহ: বিএলএফ শিশুশ্রমের পরিমাণ বোঝার জন্য গবেষণা পরিচালনা করে এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পগুলো চিহ্নিত করে, যেমন গার্মেন্টস উৎপাদন, কৃষি এবং গৃহস্থালি কাজ।
  • মনিটরিং ব্যবস্থা: বিএলএফ কর্মস্থল মনিটর করার জন্য ব্যবস্থা তৈরি করতে সহায়তা করে এবং নিশ্চিত করে যে শিশুশ্রম আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে।

পার্টনারশিপ

  • স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: বিএলএফ স্থানীয় এনজিও, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে সহযোগিতা করে শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে তাদের প্রচেষ্টা শক্তিশালী করতে
  • পরিবারের সহায়তা: এটি পরিবারগুলিকে অর্থনৈতিক সহায়তা বা বিকল্প আয়- উতপাদন প্রশিক্ষণ প্রদান করে, যাতে শিশুশ্রমের ওপর তাদের নির্ভরশীলতা কমানো যায়।

ঝুঁকিপূর্ণ যুবকদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন

বিএলএফ বড় শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা বিকাশ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করে, যাতে তারা বৈধ ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের সুযোগের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।

শিশু শ্রমের সমস্যা সমাধানে বহুমুখী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমে বিএলএফ পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনতে এবং শিশুদের অধিকার রক্ষা করতে কাজ করছে, যা বৈশ্বিক মানদণ্ড এবং বাংলাদেশের জাতীয় লক্ষ্যসমূহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

Scroll to Top